আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৩, ০৮:৪১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনামুখী করেন তিনি

দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনামুখী করেন তিনি
’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু যখন সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যান। ওইদিন তাদেরও ৩২ নম্বরের বাসভবনে থাকার কথা ছিল। ড. ওয়াজেদ মিয়া ওইসময় পশ্চিম জার্মানিতে প্রশিক্ষণে ছিলেন। তিনি তার স্ত্রী শেখ হাসিনাকে জার্মানিতে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করছিলেন। তখন শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. আব্দুল মতিন চৌধুরীর কাছে গেলে তিনি জার্মানিতে যেতে নিষেধ করেন। শেখ হাসিনাকে তিনি বলছিলেন, তোমার বাবা ১৫ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। তাই তোমাকে ওইদিন বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসেই থাকতে হবে। বিষয়টি নিয়ে শেখ হাসিনা দোটানায় পড়ে গেলেন। তিনি বাবা বঙ্গবন্ধুকে বিষয়টি জানালেন। বললেন, বাবা এখন আমি কী করব। বঙ্গবন্ধু কোনো সময় না নিয়েই বললেন, ‘তোমার জামাই যা বলে তুমি তাই করো।’ তিনি ১৫ আগস্টের মাত্র ১৪ দিন আগে ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে জার্মানির উদ্দেশে রওনা দেন। তার পরের ঘটনা বড়ই নির্মম, মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর জার্মানিতে শেখ হাসিনার নিরাপদেই থাকার কথা। কারণ তিনি সেখানে রাষ্ট্রদূতের বাসভবনেই ছিলেন। কিন্তু তাকে কীভাবে জার্মানি থেকে বের করে দেওয়া যায়, সেই ছলাকলা অঙ্কন করা হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী ছিলেন একজন পেশাদার কূটনীতিক। তিনি তাকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা নিলেন। পরে তিনি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিলেন। ভারত সরকারের সহযোগিতায় শেখ হাসিনা দিল্লি এলেন। মানুষের বিপদেই মানুষের পরিচয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী সামরিক সরকার সেদিন ক্ষমতায় থাকায় শেখ হাসিনা দেশে আসতে পারেননি। এমনকি ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করার পরও তিনি দেশে আসতে পারেননি। জিয়াউর রহমানের আমলে শেখ হাসিনা আগমন প্রতিরোধ কমিটিও গঠন করা হয়। এ কমিটি তার আগমনের বিরোধিতা করে নানা কর্মসূচি পালন করে। তাকে প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি সব উপেক্ষা করে ১৭ মে দেশে এলেন। সেদিন তাকে একনজর দেখার জন্য বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তায় জড়ো হয় লাখো জনতার স্রোত। রাস্তার সেই জনগণের ভিড় সামলে কয়েক ঘণ্টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে এলেন শেখ হাসিনা। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। আর মানুষও বৃষ্টিতে ভিজে তা বিভোর হয়ে শুনছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা বললেন, আমি দলীয় সভাপতি হিসেবে নয়, দেশকে এবং দেশের জনগণকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি দিতেই দেশে এসেছি। তার এমন বক্তব্য ছিল যেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের দেওয়া বক্তব্য—‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ সেই বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি। শেখ হাসিনা প্রত্যাবর্তন করে দেশকে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনামুখী করেছেন। সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তার প্রত্যাবর্তনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। গণতন্ত্র, রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সার্বিক অবকাঠামোর উন্নতি হয়েছে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। আর শেখ হাসিনার লক্ষ্য আপামর মানুষের মুক্তি। যেন তার বাবার স্বপ্নেরই প্রতিধ্বনি। তার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তিনি দীর্ঘজীবী হোন সেই প্রার্থনা। তার হাত ধরেই পূরণ হোক পিতার স্বপ্ন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর

বানরের উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

‘সংস্কার কমিশনকে বলেছি, ৫ আগস্টের আগে জুলাই সনদ করতে হবে’

কোনো দলের সম্পদ নয়, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের : সারজিস

ফিফার নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও এক ক্লাব

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন

ওসি পদায়নে ২২ দফা নীতিমালা

সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক সম্পত্তি মেরামতে সহযোগিতা দেবে ভার‍ত

যশোরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সেনাবাহিনীর সহায়তা

নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা ইমরান খানের সাবেক স্ত্রীর

১০

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে উত্তরায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল 

১১

কিছু ষড়যন্ত্রকারী দেশের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করতে চায় : এনডিপি

১২

চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন জামায়াতের আমির

১৩

বাঙলা কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবির ও সেক্রেটারি সাকিব

১৪

উপুড় হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস, ডেকে আনছেন যেসব ক্ষতি

১৫

পাল্টা শুল্ক নিয়ে তৃতীয় ধাপের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার

১৬

পুলিশ সদর দপ্তরের পর্যালোচনা / ছয় মাসে ২৭ হত্যার কোনোটিই সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নয়

১৭

‘আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন’

১৮

কিডনির সমস্যা আছে কি না জানবেন যেভাবে

১৯

৩ দলকে স্বেচ্ছাসেবক দলের হুঁশিয়ারি

২০
X