সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩, ১০:১০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ভয়ংকর মাদক উদ্ধার : তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি নিশ্চিত করুন

ভয়ংকর মাদক উদ্ধার : তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি নিশ্চিত করুন
দেশে মাদকের বিস্তৃতি দিন দিন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বেশি এ ভয়াবহতার শিকার হচ্ছে যুবসমাজ। আজ যে যুবকরা সুন্দর সমাজ গঠনে নিজেদের নিয়োজিত করবে, যে তরুণদের কাঁধে একসময় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ হবে, তাদের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ যদি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায় অথবা এই সমাজ যদি তাদের সেই ধ্বংসের পথে চালিত করে; তবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে, তা কি আমরা ভেবে দেখেছি? নিত্যনতুন ভয়ংকর সব মাদকে দেশ সয়লাব। কী গ্রাম, কী শহর—সব জায়গা মাদক কারবারির সাম্রাজ্য যেমন বিস্তৃত, তেমনি মাদকাসক্তেরও। রাজধানী ঢাকার একটি শ্রেণির পরিবারের তরুণদের চিত্র অত্যন্ত উদ্বেগের। বিশেষ এই শ্রেণির পরিবারের তরুণদের বেপরোয়া জীবনযাপন, মাদকাসক্ত হওয়া, এমনকি সরাসরি মাদক কারবারি বনে যাওয়ার খবরও মাঝেমধ্যেই সামনে উঠে আসে। গণমাধ্যমের কল্যাণে তখন আমরা আরও ভয়ানক খবর জানতে পারি। তা হচ্ছে—এসব অপরাধীকে বাঁচাতে খোদ প্রশাসনসহ রাজনৈতিক মহলের বিভিন্ন ক্ষমতাধর ব্যক্তির হস্তক্ষেপ! আবার কখনো কখনো এ কার্যক্রমে নিয়োজিত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অসহায়তাও লক্ষণীয়। আমরা মনে করি, এটি কোনো বিবেচনাতেই একটি সভ্য সমাজের চিত্র হতে পারে না। অতিসম্প্রতি এমনই একটি ঘটনার সাক্ষী হতে হলো আমাদের। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর এপিএস মফিজুর রহমান। তার সরকারি বাসা থেকে ভয়ংকর মাদক এমডিএমএসহ তার শ্যালক ইব্রাহীম কিবরিয়াকে গ্রেপ্তার করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সদস্যরা। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে ব্যবস্থা না দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নামকাওয়াস্তে দেওয়া হয়েছে সাজা। একই ঘটনায় সাজা পেয়েছেন জনপ্রিয় গায়ক শাফিন আহমেদের ছেলে আজরাফ আহমেদ ওজি। ফলে গুরুতর অপরাধ করেও কিবরিয়া ও ওজিকে যেতে হয়নি কারাগারে। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় ডিএনসি কর্মকর্তারা কারসাজি করে ওই দুজনকে রক্ষা করেছেন। শুধু তাই নয়, অভিযান পরিচালনাকারীরাই এখন রয়েছেন উল্টো চাপ ও আতঙ্কে। এমন ঘটনায় বিস্মিত সবাই। রাজধানীর অভিজাত এলাকা বিশেষ করে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় সিসা বারসহ রয়েছে নানা রকমের বিকৃত বিনোদনমূলক ক্লাব বা স্থান। এসব এলাকার উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণ-যুবকরা ডুবে রয়েছে বিভিন্ন রকমের মাদকে। এসব পরিবারের অভিভাবকরা জানেনও না তাদের সন্তানরা কোথায়, কীভাবে সময় কাটাচ্ছে। ফলে সহজলভ্য মাদকের সঙ্গে পরিচিত হতে তাদের খুব বেশি সময় লাগে না। কিন্তু হতাশার কথা হলো, যখন তাদের সন্তানরা বিভিন্ন অপরাধের পথে পা বাড়ায় এবং অপরাধ সংঘটিত করে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে, তখন অপকর্মের শাস্তির পরিবর্তে তাদের ঠিকই জুটে যায় পুরস্কার। ফলে তাদের উপলব্ধিগত জায়গায় কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসে না। একই অপরাধে ফের জড়িয়ে পড়ে। এ তরুণ-যুবকদের মাদকাসক্ত হওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মাদকের সহজলভ্যতা, একঘেয়েমি, একাকিত্ব, বিশেষ করে পারিবারিক বিচ্ছিন্নতাকেই দায়ী করছেন। আমরা মনে করি, মাদক শুধু একজন ব্যক্তিকেই ধ্বংস করে না; একটি পরিবার, একটি সমাজ, তথা একটি জাতিকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। সেই মাদকের সাম্রাজ্যকে পুরোপুরি ধ্বংসের বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের নীতির কথাও আমরা জানি। সেই অনুসারে, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবার ভূমিকা কেবল বেমানানই নয়; এটি একটি নেতিবাচক উদাহরণ হয়ে থাকবে। মাদকের ছোবল থেকে যুবসমাজ রক্ষা করতে নৈতিক মূল্যবোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভেজানো ছোলা খাওয়ার উপকারিতা

হামলা মামলা ও লাঞ্ছনার শিকার লালমনিরহাটের ৬ সাংবাদিক

কলেজছাত্রীকে বিবস্ত্র, লজ্জায় আত্মহত্যা

প্যারিসের আলোয় উদ্ভাসিত অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

ট্রলার উদ্ধারে গিয়ে ডুবল স্পিডবোট, সৈকতে ভেসে এল ২ মরদেহ

সিলেটে ‘অবৈধ’ নিয়োগে প্রভাষক জালিয়াতিতে অধ্যক্ষ!

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী শনিবার

ইতিহাসে এই দিনে কী ঘটেছিল?

অস্ট্রেলিয়ায় উদ্ভাবিত বিশ্বের প্রথম টাইটানিয়াম হার্ট মানবদেহে প্রতিস্থাপন

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

১০

শক্তিশালী পাসপোর্টে শীর্ষে সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশের অবস্থান কত?

১১

২৭ জুলাই : নামাজের সময়সূচি

১২

যে ভুলে মরতে পারে টবের গাছ

১৩

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে ২৪ বছর ধরে চাকরি, অতঃপর..

১৪

ঝিনাইদহে ২৪ বছর ধরে ক্রিকেট ব্যাট বানাচ্ছেন ৩ ভাই

১৫

জামালপুরে ১০ মামলায় আসামি ২৩০৫, গ্রেপ্তার ৩২

১৬

আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

১৭

যাত্রী পারাপার কমেছে আখাউড়া স্থলবন্দরে

১৮

সিলেটে ৭ চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭

১৯

‘সাংবা‌দি‌কের ওপর হামলা নিঃস‌ন্দে‌হে ছাত্র‌দের কাজ নয়’

২০
X