সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৩, ০৮:৪৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নির্বাচনের প্রশ্নে রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন

নির্বাচনের প্রশ্নে রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন
আগামী সাধারণ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা। আমাদের দেশে এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। নির্বাচনকে সামনে রেখে কূটনীতিকদের এ প্রবণতা আমরা অনেক দিন ধরেই প্রত্যক্ষ করছি। এবারও তারা দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সহিংসতামুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার আহ্বান জানাচ্ছেন। নানা পরামর্শের পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতাও দিতে চাইছেন। দেড় দশকের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সভা-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত করছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নানা কৌশল নির্ধারণের পাশাপাশি এ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অটল অবস্থান ঘোষণা করে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। অন্যদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী দেশের কূটনীতিকরা আমাদের দেশে আসছেন। আবার ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরাও তৎপরতা বাড়িয়েছেন। বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে শুধু বিরোধী দল বিএনপির নেতারা দেখা-সাক্ষাৎ করছেন, তা নয়। সরকারি দল আওয়ামী লীগও আনুষ্ঠানিকভাবেই কথা বলছে। বোঝা যাচ্ছে, আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে আগ্রহ সমান। বিদেশিরা প্রায় সবাই যে আগামী নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক সেটা চাইছে, তাতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের মানুষও একটি ভালো নির্বাচন দেখতে চায়। সব দল নির্বাচনে আসুক, ভোটাররা নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত হয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন, প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী প্রচার-প্রচারণার বাধামুক্ত সমান সুযোগ পান—এসব চাওয়া নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়। কিন্তু বিতর্ক আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আছে সমঝোতার ঘাটতি। সব দল একমত হয়ে চলবে—সেটা প্রত্যাশিত না হলেও মোটা দাগে কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য না থাকলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে না। আমাদের দেশ রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। ক্ষমতাসীন দল ও ক্ষমতার বাইরে থাকা দল এক ভাষায় কথা বলে না। দেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল থাকলেও মূলত দুই দলের হাতেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে রাজনীতি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—এই দুই দলের মধ্যে মতৈক্য হলে অন্য দলগুলো বড় সংকট তৈরি করার সক্ষমতা রাখে না। আগামী নির্বাচন যদি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে বিএনপি তাতে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি চায় একটি নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সেটা সম্ভব নয়। তাই বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলনে নেমেছে। সংকট সেখানেই। আর এ সুযোগটিই নিচ্ছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। আমরা মনে করি, আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশি কূটনীতিকদের অনাহূত হস্তক্ষেপ কোনো বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। যে কোনো দেশের কূটনীতিকদের আচরণগত একটা সীমারেখা আছে, আবার প্রতিটি দেশেরও নিজস্ব একটা স্বকীয়তা আছে। এ বিষয়টি আমাদের সবাইকে বিবেচনার মধ্যে রাখতে হবে। আর আমাদের দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা নির্বাচনের দায়িত্ব জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর। আমাদের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। অব্যাহত থাকবে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আসলেই কি পিসিবির কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন পাইক্রফট?

কুমিল্লায় ফের বাড়ছে স্ক্যাবিসের সংক্রমণ

গার্দিওলার চোখে ইতিহাসের সেরা কোচ কে?

সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের শিল্প গ্রুপের দুই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার 

আজ প্রথম প্রেম মনে করার দিন

এবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পিটিশনে সই করল হাজারো ইসরায়েলি

কীভাবে বুঝবেন ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া হয়েছে

চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা

নিখোঁজের এক মাস পর শ্বশুরবাড়ির সেপটিক ট্যাংকে মিলল জামাইয়ের লাশ

শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১

১০

টানা ৫ দিন বৃষ্টি ঝরতে পারে যেসব অঞ্চলে

১১

বাকৃবিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস

১২

কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারির দাবিতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

১৩

বিয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে এসে খুন হলেন নারী 

১৪

পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

১৫

মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

১৬

মেন্টরস' স্টাডি অ্যাব্রোডের আয়োজনে ‘স্টাডি ইন দ্য ইউকে অ্যান্ড আয়ারল্যান্ড ওপেন ডে’

১৭

পাকা চুল বা দাড়ি তুলে ফেলা কি জায়েজ?

১৮

শেখ হাসিনাসহ দায়ীদের কঠোর শাস্তি চাইলেন নাহিদ

১৯

পূর্বপুরুষের হস্তান্তর করা জমি দাবি করে আরেক জমি দখলচেষ্টার অভিযোগ

২০
X