সম্পাদক ও প্রকাশক : সন্তোষ শর্মা । বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): পলাশ মাহমুদ
কালবেলা মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স, ৪৪/১, রহিম স্কয়ার, নিউমার্কেট, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং ২৮/বি, টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা, শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত।
২০১৬ সালে শাকিব খানকে নিয়ে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার কাজ শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে যায় এর কাজ। ছবিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নানাভাবে শোনা গেলেও এবার প্রযোজক রহমত উল্লাহ শাকিব খানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। একই সঙ্গে দিয়েছেন মামলার হুমকি।
তার অভিযোগ, ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর একজন নারী সহ-প্রযোজককে ধর্ষণ করেছিলেন ঢালিউডের পোস্টার বয় শাকিব। এটিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগ এনে গতকাল ১৫ মার্চ তিনি একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে। সেখানে তার দাবি, সে ঘটনায় শাকিবকে সেসময় অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ আটকও করেছিল।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে প্রযোজক লেখেন, “২০১৭ সালে পূর্বচুক্তি অনুযায়ী অভিনেতা শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর কাজে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। আমি সেই চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রযোজক। তার মতো একজন বিখ্যাত অভিনেতাকে নিজের চলচ্চিত্রে অভিনয় করাতে পারব জেনে পুলকিত ছিলাম। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে ব্যবসা সফল হবে সেই বিশ্বাস ছিল। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ মুক্তি পেলে সেটি হতো অস্ট্রেলিয়ায় নির্মিত প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। আমার এবং এটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার আশা ছিল ছবিটির হাত ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নতুন একটি অধ্যায় রচিত হবে।”
তিনি চলচ্চিত্রটির শুটিংয়ের সময় শাকিব কী ধরনের অসহযোগিতা ও অপেশাদার কাজ করেছিলেন–তার একটি তালিকাও দেন। সে তালিকার শুরুতেই বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও কোনো রকমের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শুটিং বাতিল করে দিতেন শাকিব। তার খাদ্যাভ্যাসজনিত চাহিদা ছিল এমন যে, হঠাৎ করে তিনি অদ্ভুত রকমের
খাবার খেতে চাইতেন; আর তাতেই পুরো শুটিং ইউনিট নিয়োজিত হতো তার পছন্দের খাবার খুঁজে বের করার জন্য। এতে করে শুটিংয়ের কাজে যেমন ব্যাঘাত হতো, তেমনি চলচ্চিত্র নির্মাণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে গিয়েছিল।’
রহমত উল্লাহ দাবি করেন, শাকিব শুটিংয়ে নিজের ইচ্ছামতো আসতেন। বলেন, ‘ব্যয়বহুল সেট বানিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করতে হতো ইউনিটের। তিনি হয়তো শেষ বেলায় দু-এক ঘণ্টা অভিনয় করার জন্য আসতেন। এভাবে শুটিং না করেও সবার বেতন দিয়ে তারা শুধু আপেক্ষা করতেন শাকিব আসবেন বলে।’
তবে গুরুতর অভিযোগ যৌনচার নিয়ে। শাকিবকে নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো বলেও অভিযোগপত্রে লেখেন তিনি। আর তা না হলে তার হোটেল কক্ষে অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হতো বলেও অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়। তিনি লেখেন, ‘আস্ট্রলিয়ায় শুটিং করতে এসে যদি শাকিব খান কোনো একটি ব্যাপারে নিয়মিত থেকে থাকেন, তবে তা হলো রমণীসঙ্গ। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই যৌনকর্মীদের মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক আমাদেরই দিতে হতো।’
জানান, সেসময়ই শাকিব ছবির এক নারী সহ-প্রযোজককে ধর্ষণ করেন। তিনি লেখেন, ‘ভুক্তভোগী ওই নারীকে তিনি পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করেছেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। নির্যাতিতা তখন এই ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। (মামলা নং NSW Police reference no: E ) নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী।’
তবে এ প্রযোজকের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এতদিন পরে কেন এগুলো সামনে আনা হচ্ছে? তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম তিনি হয়তো ছবিটা শেষ করেবেন। আশায় ছিলাম লোকসান পোষানো যাবে। তবে তা হয়নি।’
তবে তার অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য পাওয়া যায়নি শাকিব খানের।
এদিকে শাকিব খানের ঘনিষ্ঠজনরা রহমত উল্লাহর বক্তব্যের বিপরীতে প্রশ্ন তোলেন। জানতে চান, শাকিব খান সময় দিলে কি তাহলে অভিযোগ তুলতেন না প্রযোজক? প্রযোজকের অভিযোগ সত্য হলে, তাহলে শাকিব কাজটি করলেই ধর্ষণের বিপরীতে খালাস পেতেন তিনি?
প্রযোজকের সঙ্গে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, রহমত উল্লাহর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম সিনেফেক্ট। এটি ছবিটির সহ-প্রযোজক।
২০১৫ সালে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ চলচ্চিত্রটি তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন পরিচালক আশিকুর রহমান। ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে ছবির কাজ শুরু হয়। ৬০ শতাংশের মতো শেষ হওয়ার পর শুটিং আর এগোয়োনি।
২০১৮ সালে নির্মাতা আশিকুর উল্টো তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। শুরু থেকেই তিনি নানা হয়রানি ও সম্মানহানির শিকার হচ্ছেন ওই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের অস্বাভাবিক নানা কার্যক্রমে—এমনটা দাবি করে অস্ট্রেলিয়া পুলিশের কাছে একটি অভিযোগও দায়ের করেন তিনি।
সেসময়ও রহমত উল্লাহর প্রতিষ্ঠান শুটিং ফাঁসানো ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনেন নির্মাতা আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত করা হয় শাকিব খানকেও। তবে তা ছিল শুধু চুক্তিভঙ্গের। প্রতিষ্ঠানটি তখন অভিযোগ করে বলে, ‘শাকিব খানকে নিয়ে পরিচালক ‘সুপারহিরো’ নামের আরেক ছবির কাজ শুরু করেছে একই লোকেশনে। বন্ধ রেখেছে তাদের ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর কাজ।
সম্প্রতি শাকিব খানের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন গতকাল বলেন, ‘মাত্রই অভিযোগ পেয়েছি। আগামী সপ্তাহের মিটিংয়ের কার্যবিবরণীতে বিষয়টি রাখা হবে। আমরা পুরো বিষয়টি বুঝতে চাই। আর অভিযুক্ত যদি মামলা বা আইনি পদক্ষেপ নেয়, তাহলে আমরা সেদিকটার দিকেই নজর রাখতে চাই। এরপর শিল্পী সমিতির সিদ্ধান্ত।’
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আলভারেজের দাম বেঁধে দিল ম্যানসিটি
১
জোট বেঁধে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় রাশিয়া-চীনের যুদ্ধবিমানের হানা
২
প্রাথমিক বিদ্যালয় কবে খুলবে সিদ্ধান্ত রোববার
৩
পাঁচ পদে ২০ জনকে নিয়োগ দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়
৪
মোবাইল ইন্টারনেট কবে চালু হবে, জানা যাবে কাল
৫
শিশু আহাদের দাফন দিয়ে বাড়িতে শুরু পারিবারিক কবরস্থানের
৬
প্যারিসে বেরসিক বৃষ্টিতে ভিজল বিশ্ব নেতারা
৭
শেখ হাসিনার অর্জন ধ্বংস করতে চায় হামলাকারীরা : ওবায়দুল কাদের
৮
ইরানের সঙ্গে সমঝোতা করতে চেয়েছিলেন বাইডেন
৯
ইহুদিদের পছন্দ করেন না কমলা, বললেন ট্রাম্প
১০
ন্যাটোর আদলে সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব ইসরায়েলের
১১
যানজট সরিয়ে ভোগান্তি দূর করেন নবরু
১২
বর্ষায় জমে উঠেছে চাক জালের হাট
১৩
ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী
১৪
সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা
১৫
ঝালকাঠিতে গভীর নলকূপে পানির সংকট
১৬
ব্যাট-বলে সাকিবকে শরীফুলের টেক্কা
১৭
দেশকে আগের মতো ভিক্ষুকের জাতি বানাতেই এমন সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী
১৮
রাজবাড়ীতে ভাড়ায়চালিত বাইকারের বিরুদ্ধে যাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ