আগের দুটি শর্ত বহাল রেখে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এখন সুপারিশটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। গতকাল রোববার বিকেলে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সেটার সময় শেষ হলে তারা আবার নতুন করে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে আগের মতো দুটি শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শর্তগুলো আমি পরিষ্কার বলে দিতে চাই। তিনি ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা করবেন, তার মানে তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না—তা নয়, তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন এবং ওই সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।’
খালেদা জিয়া বাসায় থেকে রাজনীতি করতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘দরখাস্তে যেটা বলা হচ্ছে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। সে ক্ষেত্রে রাজনীতি করার প্রশ্নটা তো অবান্তর। তিনি মুক্ত, তিনি অসুস্থ, চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখানে রাজনীতির কথা আসাটা আমার মনে হয় কোনো প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেন, ‘একজন অসুস্থ মানুষ কী করতে পারবে, কী করতে পারবেন না—আমি সেই নির্দেশনা দেব না। সবাই স্বীকার করছেন তিনি অসুস্থ।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন। সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে দুটি শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছিল ২০২০ সালের ২৫ মার্চ। তখন দেশে করোনা মহামারি চলছিল। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ২৪ মার্চ শেষ হতে যাচ্ছে। মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনের ব্যাপারে মতামত দিতে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয় মতামত দেওয়ার পর আবেদনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।