কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

মাম্পস : লক্ষণ ও প্রতিরোধ

মাম্পস : লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মাম্পস হলো লালাগ্রন্থির ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ, যা মাম্পস ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। চোয়ালে থাকা প্যারোটিড লালাগ্রন্থিকে আক্রান্ত করলেও পরে এ রোগ অন্য অঙ্গেও সংক্রমিত হতে পারে। লিখেছেন ডা. আকিব আদনান লিখন। সাধারণত ৩-৮ বছর বয়সী শিশুদের মাম্পস হয়ে থাকে। তবে যে কোনো বয়সীই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এই রোগ একবার হলে পরে সাধারণত আর হয় না। শীত ও বসন্তে এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। মাম্পস একটি স্বল্পমেয়াদি ছোঁয়াচে রোগ, যা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, লালার মাধ্যমে ছড়ায়। প্যারোটিড গ্রন্থি ফুলে ওঠার পর ৫-৭ দিন পর্যন্ত এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি, লালা, সর্দি এমনকি কথার মাধ্যমে আণুবীক্ষণিক কণাগুলো বাতাসে ভেসে ছড়িয়ে পড়ে। উপসর্গ শরীরে ভাইরাস প্রবেশের ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়। প্রাথমিকভাবে জ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, অবসাদগ্রস্ততা থাকলেও কিছুদিনের মধ্যে প্যারোটিড গ্রন্থি তথা গাল ও চোয়াল ফুলে ওঠে এবং ব্যথা হয়। এ সময় মুখে দুর্গন্ধ, চোয়াল শক্ত ও ব্যথা থাকায় কথা বলা, খাওয়া এসব কঠিন হয়ে পড়ে। কারও গালের পেছনে ও নিচে, গলা, ঘাড় এবং কান আক্রান্ত হতে পারে। একপাশের লালাগ্রন্থি সংক্রমণের কিছুদিন পর দুই পাশেও ছড়াতে পারে। জটিলতা সাধারণত এই রোগ সেরে গেলেও কোনো ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংখ্যা বেশি হলে তা অন্যান্য অঙ্গ যেমন মস্তিষ্ক, অগ্ন্যাশয়, জননাঙ্গ প্রভৃতি আক্রান্ত করে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে জ্বর, অচেতন হওয়া, স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পাওয়া, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, তীব্র পেটের ব্যথা, বমি, পুরুষদের অণ্ডকোষে ব্যথা, নারীদের তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তখন দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রতিষেধক ও প্রতিরোধ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সপ্তাহখানেকের মধ্যে এ রোগ ভালো হয়। প্যারাসিটামল, অ্যান্টি হিস্টামিন, ব্যথানাশক—এসব প্রাথমিকভাবে দেওয়া হয়। আক্রান্ত প্যারোটিড গ্রন্থিতে ঠান্ডা অথবা গরম সেঁক দেওয়া যেতে পারে। জটিল আকার নিলে চিকিৎসকরা স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। মাম্পস রোগীর ক্ষেত্রে আইসোলেশন-পরবর্তী সময়ে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। প্রচুর পানি ও তরল-নরম খাবার খাওয়াতে হয়। ফোলা জায়গায় গরম সেঁক খুব উপকারী। বারবার কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে গার্গল করা নিশ্চিত করুন। ছোঁয়াচে বলে এ রোগ হলে শিশুকে খুব কাছ থেকে আদর করা বা চুমু দেওয়া ঠিক নয়। রোগীকে পরিষ্কার রাখতে হবে, দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। শিশুদের ‘সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি’র (ইপিআই) আওতায় মাম্পস টিকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া দেশে এমএমআর ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, যা একইসঙ্গে মাম্পস, হাম এবং রুবেলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক। এমএমআর ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দিতে হয়। প্রথম ডোজটি ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সের মধ্যে, দ্বিতীয়টি ৪-৬ বছর বয়সের মাঝে দিতে হয়। গর্ভকালীন এই টিকা দেওয়া যাবে না। কেউ চাইলে শিশুর ১৫ মাসে এমআর টিকার দ্বিতীয় ডোজের পরিবর্তে এমএমআর টিকা দিতে পারে, যা এমএমআর টিকার প্রথম ডোজ হিসেবে গণ্য হবে এবং সেক্ষেত্রে চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজটি দিতে হবে। কোনো শিশু যদি আগে এমএমআর টিকা পেয়ে না থাকে এবং শিশুর বয়স যদি পাঁচ বছর পার হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ন্যূনতম এক মাসের ব্যবধানে এমএমআর টিকার দুটি ডোজ দেওয়া যাবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাছুরের ওজন কম, বিতরণ না করে ফেরত দিলেন ইউএনও

আজ মেতে উঠুন ‘চায়ের আড্ডায়’

যুক্তরাজ্য থেকে বড় ধাক্কা খেল ইসরায়েল

আসিফ-মাহফুজকে পদত্যাগের আহ্বান ইশরাকের

হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

মোবাইলে কথা বলার সময় পাঁচতলা থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু

ইশরাককে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের আদেশ আজ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের নেতৃত্বে শাকিল-অনিক

‘টুকরো টুকরো হওয়ার শঙ্কায় সিরিয়া, গৃহযুদ্ধ আসন্ন’

সাদা পাথর লুটপাটে জড়িত ১৪ জনের কারাদণ্ড

১০

গাজায় পুষ্টিহীনতা ও ওষুধের তীব্র সংকট, মৃত তিন শতাধিক

১১

আজকের দিন কেমন কাটতে পারে, জেনে নিন রাশিফলে

১২

শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে দুজনের মৃত্যু

১৩

দুপুরের মধ্যে ৫ জেলায় ঝড়ের শঙ্কা

১৪

টিভিতে আজকের খেলা

১৫

২১ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৬

২১ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৮

কাজে আসছে না কোটি টাকার ‘লাইটনিং এরেস্টার’

১৯

দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা

২০
X