মাসুদ রানা
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৩১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

হর্ন শুনলেই সাফরান ভাবে বাবা এসেছে

হর্ন শুনলেই সাফরান ভাবে বাবা এসেছে
জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিশুসন্তানসহ পরিবার নিয়ে বাস করতেন। প্রতিদিন নিজের ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে ফিরতেন বাসায়। বাসার সামনে পৌঁছানোর পর হর্ন বাজাতেন। সেই শব্দ শুনে ‘বাবা এসেছে, বাবা এসেছে’ বলে তার সাড়ে তিন বছরের ছেলে সাফরান করিম ছুটে আসত। কিন্তু এখন সেই চিত্র পাল্টেছে। মানসিক সমস্যায় ভুগে দুই বছর আগে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আনিসুল। সেখানে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। কিন্তু এখনো বাসার সামনে গাড়ির হর্ন বাজলে সাফরান ভাবে তার বাবা এসেছে। স্মৃতিচারণ করে আনিসুলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘আনিসুলের গাড়ির হর্ন শুনে সাফরান দৌড়ে গিয়ে বাবার কোলে উঠত। এখন সে বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। মায়ের কাছেই থাকে। তবে গাড়ির হর্ন শুনলে বাবা আসছে ভেবে এখনো ডাক দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য আমার জীবিত ছেলেকে নিয়ে গেলাম। কিন্তু তারা চিকিৎসা না করে হত্যা করল। অসুস্থ শরীর নিয়ে চলছি। বেঁচে থাকা অবস্থায় ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।’ আনিসুলের বোন ডা. উম্মে সালমা বলেন, ‘আমরা পরিবারের সম্পদকে হারিয়েছি। তার সন্তান হারিয়েছে বাবাকে। বাবাকে ছাড়াই সাফরান এখন স্কুলে যাচ্ছে। তার সহপাঠীদের মা-বাবা স্কুলে আসে। কিন্তু সাফরানের বাবা আসে না। ভাই হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করা হোক। জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’ চিকিৎসার জন্য ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর আনিসুলকে আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের পর্যবেক্ষণ কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই রুমের মেঝেতে জোরপূর্বক উপুড় করে তিন থেকে চারজন হাঁটু গেড়ে তার পিঠের ওপর বসেন। কয়েকজন তার দুই হাত পিঠমোড়া করে ওড়না দিয়ে বাঁধেন। কয়েকজন কনুই দিয়ে আনিসুলের ঘাড়ের পেছনে ও মাথায় আঘাত করেন। পরে একজন মাথার ওপরে চেপে বসেন ও অন্যরা তার পিঠ, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি মারেন। নিস্তেজ হয়ে পড়েন আনিসুল। তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন আদাবর থানায় আনিসুলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। আসামিরা হলেন হাসপাতালের পরিচালক আরিফ মাহমুদ জয়, ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান, কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদ আমিন, ফাতেমা খাতুন, মুহাম্মদ নিয়াজ মোর্শেদ, হাসপাতালের সমন্বয়ক দেওয়ান সাব্বির, কর্মচারী মাসুদ খান, জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহম্মেদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ, আবদুল্লাহ আল মামুন এবং ডা. নুসরাত ফারহানা। ২০২২ সালের ৮ মার্চ ঢাকার আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা ও আদাবর থানার পরিদর্শক ফারুক মোল্লা অভিযোগপত্র জমা দেন। তবে ডা. নুসরাতের নাম অভিযোগপত্রে আসেনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাহজালালে দর্শনার্থী প্রবেশে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা

মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান মারা গেছেন

এনরিকের জন্য নজিরবিহীন চুক্তির পথে পিএসজি

প্রতিদিনের এই ৫ অভ্যাস পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দেয়

অপহরণের পর লোটো শোরুম মালিককে হত্যা

টিএফআই সেলে নির্যাতন / শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিচার শুরুর আদেশ

ওদের হাত থেকে দিল্লিও কেড়ে নেব : মমতা

যুক্তরাষ্ট্র উপকূলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৫

জমিয়তকে ৪ আসনে ছাড়ের ঘোষণা বিএনপির

৪০ বছরের পর প্রত্যেক পুরুষের যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি

১০

বেগম জিয়াকে নিয়ে জাইমা রহমানের আবেগঘন স্ট্যাটাস 

১১

বিদেশি মুখ থাকলেও দেশের কোচেই ভরসা ঢাকার

১২

দুপুরের খাবার সুবিধাসহ সুলতান’স ডাইনে চাকরি

১৩

রুক্ষ রূপে বিজয় দেবরাকোন্ডা

১৪

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ৯ 

১৫

পরিবারসহ বিএনপি প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

১৬

দলবদলের এক দিন পর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক 

১৭

পাকিস্তানের কাছে লজ্জাজনক হারের পর দলের কাছে ব্যাখ্যা চায় বিসিসিআই

১৮

তেঁতুলিয়ায় ঘন কুয়াশা, হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি

১৯

ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব

২০
X