কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ১০:২২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নজরুলের নিষিদ্ধ গ্রন্থ

নজরুলের নিষিদ্ধ গ্রন্থ
কাজী নজরুল ইসলাম বিংশ শতাব্দীর প্রধান বাঙালি কবি ও সংগীতকার। তার মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য, তা অতুলনীয়। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি। বিদ্রোহী কবি, প্রেম, সাম্য ও সৌন্দর্যের কবি। তবে তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন অবিভক্ত ভারতে বিদ্রোহী কবির শোষকের কোপানলে পড়তে হয়েছে বারবার। ১৯২২ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলামের পাঁচটি বই বাজেয়াপ্ত করা হয়। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত হয় তার আরও কিছু বই। এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে নিপীড়িত কবি ছিলেন নজরুল। এতটা রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন আর কেউ ভোগ করেননি। তবে এ নিপীড়ন ছিল মূলত জনতার ওপর চলা নিপীড়নেরই অংশ। এমন কবি নেই বললেই চলে, যিনি এমন করে জনতার নিপীড়নের ভাগ নিজের পিঠে নিয়েছেন। উপমহাদেশে শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ গ্রন্থকে করা হয়েছিল নিষিদ্ধ। নজরুলের নিষিদ্ধ কাব্যগ্রন্থগুলো হলো— যুগবাণী, বিষের বাঁশি, ভাঙার গান, প্রলয় শিখা ও চন্দ্রবিন্দু। তালিকাভুক্ত ছিল আরও ১০টি বই। এ ছাড়া ২৫টি গ্রন্থের কোনো দ্বিতীয় সংস্করণ বের হয়নি। ৯টি গ্রন্থের প্রকাশক ও মুদ্রক স্বয়ং লেখক নিজে। এতেই পরিষ্কার হয় যে, সে সময় ব্রিটিশ শাসকের ভয়ে প্রকাশকরাও ছিলেন ভীত-সন্ত্রস্ত্র। নজরুলের জন্ম পরাধীন ভারতবর্ষে। তার জন্মের আগেই ব্রিটিশের পরাধীন এ অঞ্চলে সংস্কৃতি ও রাজনীতিমনস্ক, মুক্তিকামী বিপুল এক শ্রেণির অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহ, গুপ্ত হামলা, পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে লেখালেখির এক জগৎ তৈরি হয়েছে সর্বত্র। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে শাসকশ্রেণির নিপীড়ন-নির্যাতন, জেল-জুলুম এবং লেখকদের রচনা নিষিদ্ধ করার কাজ। সেই অগ্নিযুগে হতদরিদ্র এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। তবে ভেতরে তার দ্রোহের আগুন। ব্রিটিশ শাসকদের অন্যায়-অবিচার, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছিল তার আজন্মের ক্ষোভ। তার মধ্যে বিকশিত হয় এক বিদ্রোহী সত্তা। একপর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার তাকে রাজদ্রোহিতার অপরাধে কারাবন্দি করে। সেইসঙ্গে তার লেখাও নিষিদ্ধ হয়। পৃথিবীতে শাসকশ্রেণির রোষানলে পড়া কবি-সাহিত্যিক নেহাত কম নয়। তুরস্কের নাজিম হিকমত, রোমান কবি ওভিদ, হোমার, দস্তয়ভস্কিসহ এ তালিকা দীর্ঘই হবে। তবে নজরুলের মতো শাসকশ্রেণির চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে খুব কমই। কাজী নজরুল ইসলাম অন্যায় কোনোদিন মেনে নেননি। পরাধীনতা তাকে কখনো শান্তিতে থাকতে দেয়নি। স্বাধীনতার জন্য ব্যাকুল কবি-পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙাই ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। সে জন্য লেখাই ছিল তার অস্ত্র; যার মাধ্যমে তিনি সমাজকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে ছিলেন সারা জীবন সোচ্চার। ব্রিটিশ শাসনামলে তার বেশিরভাগ লেখাই ছিল শাসকশ্রেণির ওপর আক্রমণ। তাই ব্রিটিশ সরকার একে একে বাজেয়াপ্ত করতে থাকে তার বই। নিষিদ্ধ বইগুলা ছাড়াও বাজেয়াপ্তের তালিকাভুক্ত ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম হলো—অগ্নিবীণা, সঞ্চিতা, ফণীমনসা, সর্বহারা ও রুদ্র মঙ্গল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হঠাৎ ভূমিকম্প হলে নিজেকে রক্ষা করবেন যেভাবে

রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত, যা বললেন আজহারি

ভূমিকম্প নিয়ে কোরআন-হাদিসে কী বলা হয়েছে

পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ১০ ভূমিকম্প

ওটিটিতে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান ৩’, মনোজ বাজপেয়ীর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন

যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ বিপর্যয়, শত শত স্কুল বন্ধ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার দোয়া ও আমল

স্মার্টফোনে ভূমিকম্পের অ্যালার্ট সিস্টেম চালু করবেন যেভাবে

যেসব কারণে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয় 

মিস ইউনিভার্সের মুকুট জিতলেন মেক্সিকোর ফাতিমা বশ

১০

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত

১১

ভিয়েতনামে ভয়াবহ বন্যায় ৪১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৯

১২

টি-টোয়েন্টিতে নতুন ইতিহাস লিখলেন সিকান্দার রাজা

১৩

দীর্ঘ বিরতির পর ফিরছেন মোনালি ঠাকুর

১৪

মিস ইউনিভার্সের নাম ঘোষণা 

১৫

ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’

১৬

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া যাবেন কি না, জানা যাবে যখন

১৭

তেঁতুলিয়ায় আজ তাপমাত্রা কত

১৮

আজ থেকে নতুন দামে স্বর্ণ বিক্রি শুরু, ভরি কত

১৯

নদীর ২০ কিলোমিটারজুড়ে ৬ শতাধিক অবৈধ ফাঁদ

২০
X