সম্পাদক ও প্রকাশক : সন্তোষ শর্মা । বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): পলাশ মাহমুদ
কালবেলা মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক নিউমার্কেট সিটি কমপ্লেক্স, ৪৪/১, রহিম স্কয়ার, নিউমার্কেট, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং ২৮/বি, টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা, শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত।
পিরোজপুর শহরের উত্তর কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা শেখ হুমায়ুন কবির। নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিলেও তেমন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই তার। এক সময় মাল্টা চাষ করতেন বলে এলাকায় ‘মাল্টা হুমায়ুন’ নামে পরিচিত। প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নিজ এলাকায় নির্মাণ করেছেন আলিশান বাড়ি। নাম রেখেছেন মনের ঠিকানা। বাড়িটি তিনি মাদকের টাকায় নির্মাণ করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্তে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, এর বাইরেও পিরোজপুরে কিনেছেন বাগানবাড়ি, কয়েকশ বিঘা জমি, ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট। এমনকি স্ত্রীকেও দান করেছেন সোয়া কোটি টাকার জমি। দুদকের তদন্ত সূত্র বলছে, মাদক ব্যবসা করেই কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন শেখ হুমায়ুন।
দুদক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেড় যুগ আগেও আর ১০ জনের মতো সাধারণ জীবনযাপন করতেন শেখ হুমায়ুন কবির। তবে কয়েক বছর আগে তার চলাফেরায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এলাকায় আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেন, চড়তে শুরু করেন দামি গাড়িতে। হঠাৎ করে তার এমন বিত্তশালী হওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চলে নানা কানাঘুষা। একসময় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুদকে অভিযোগ করেন
স্থানীয়রা। সেই জেরে সংস্থাটি অনুসন্ধানে নামলে চিকিৎসার নামে বিদেশে পালিয়ে যান হুমায়ুন। এরপর আর দেশে ফেরেননি।
দুদকের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার ১৫ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩৫ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি মামলা করেছেন। এখন চলছে মামলার তদন্ত কার্যক্রম।
দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, শেখ হুমায়ুনের পটুয়াখালী শহরের উত্তর কৃষ্ণপুর এলাকায় ‘মনের ঠিকানা’ নামে বাড়িটির নির্মাণ ব্যয় ছিল ৫ কোটি ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। তবে আয়কর রিটার্নে বাড়িটির নির্মাণ ব্যয় দেখিয়েছেন ৬১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৭৪ টাকা। এ ছাড়া তার পিরোজপুরের খালিশপুর মৌজার বাগানবাড়িতে একটি দোতালা বাড়ি নির্মাণ করেছেন, যার ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। এ বাড়ির বিষয়টিও তিনি আয়কর রিটার্নে দেখাননি। এ ছাড়া তিনি পিরোজপুর শেরেবাংলা পাবলিক লাইব্রেরি কমপ্লেক্সে ৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় দোকান কিনেছেন, যা আয়কর রিটার্নে দেখাননি।
এ ছাড়া ঢাকায় তার দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে তিনি ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার টাচ হেভেন নামে ভবনে ১ হাজার ৩৫০ বর্গফুট ফ্ল্যাট ও কারপার্কিং কিনেছেন। যার মূল্য দেখিয়েছেন ৩৬ লাখ ৫ হাজার ২৫০ টাকা। বাস্তবে ফ্ল্যাটের ক্রয়মূল্য কোটি টাকারও বেশি। এ ছাড়া তিনি পূর্ব রাজাবাজারে আরেকটি ফ্ল্যাট কিনতে ৮২ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। এ ফ্ল্যাটের তথ্য আয়কর রিটার্নে দাখিল করেননি।
তদন্তে আরও দেখা গেছে, শেখ হুমায়ুনের পিরোজপুরে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ২০৩ টাকা কৃষিজমি এবং ১ কোটি ৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৩ টাকার অকৃষিজমি কিনেছেন। সেইসঙ্গে ১ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকার জমি কিনে তার স্ত্রীকে দান করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে পিরোজপুরে ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৬ টাকার জমি ক্রয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। এর বাইরেও তার বেনামে জমি ও ফ্ল্যাট আছে—এমন অভিযোগও দুদকের কাছে রয়েছে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি।
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা
১
ঝালকাঠিতে গভীর নলকূপে পানির সংকট
২
ব্যাট-বলে সাকিবকে শরীফুলের টেক্কা
৩
দেশকে আগের মতো ভিক্ষুকের জাতি বানাতেই এমন সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী
৪
রাজবাড়ীতে ভাড়ায়চালিত বাইকারের বিরুদ্ধে যাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ