কাজী মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:৪৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রামে পাহাড় কাটছে বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রামে পাহাড় কাটছে বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম নগরীতে দিন দিন বাড়ছে নির্বিচারে পাহাড় কাটার প্রবণতা। একদিকে ছিন্নমূলরা মাথা গোঁজার ঠাঁই বানাচ্ছেন, অন্যদিকে বিত্তশালীরা চালাচ্ছেন দখল। পাহাড় কাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের শক্ত অবস্থানের পরও কমেনি এ প্রবণতা। সম্প্রতি নগরীর বায়েজিদ লিঙ্ক রোডের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের বিরুদ্ধে উঠেছে পাহাড় কাটার অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়টির শেষ প্রান্তে অবকাঠামোগত উন্নয়নে পাহাড় কেটে ভবন ও সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার ঘনফুট পাহাড় কর্তন ও ২০ হাজার ঘনফুট পাহাড় মোচনের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ২০০৪ সালে বায়েজিদ বোস্তামী লিঙ্ক রোডের পাশে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন প্রতিষ্ঠার জন্য ১০৮ দশমিক ৪০ একর জমি বিনামূল্যে বরাদ্দ দেয় সরকার। পরে ২০২২ সালে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পাহাড়ের ওপর অবস্থানগত ছাড়পত্র দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। এই ছাড়পত্রে কোনো ধরনের পাহাড় কর্তন বা মোচন করা যাবে না বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটি সেই শর্ত না মেনে ভবন এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করছে। সেই জেরে গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যান অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয়টির শেষ প্রান্তে পাহাড় কেটে ভবন ও সড়ক নির্মাণের প্রমাণ পান তারা। এ সময় জরিপ কর্মকর্তা না থাকলেও প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার ঘনফুট পাহাড় কর্তন এবং ২০ হাজার ঘনফুট পাহাড় মোচন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে। তা ছাড়া সড়ক নির্মাণে একটি প্রাকৃতিক ছড়া ভরাট করা হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে পরিবেশ আইন অমান্য করা হয়েছে বলেও মনে করছেন তারা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারাই পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (মহানগর) হিল্লোল বিশ্বাস কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পাহাড় কাটা হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। পরিবেশের ছাড়পত্রে কোনোভাবেই পাহাড় কাটতে পারবে না—এ শর্ত ছিল। কিন্তু তা লঙ্ঘন করে পাহাড় কাটছে তারা। এখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি পাহাড় কাটা প্রতিরোধে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার লিঙ্ক রোডে অভিযান চালায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অভিযানে গিয়ে কর্মকর্তারা দেখতে পান, আরেফিননগরে বিশ্ববিদ্যালয়টির মালিকানায় থাকা পাহাড়ের কিছু অংশ কেটে সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। খোঁজ নিতেই তারা জানতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ দেওয়া শ্রমিকরাই সেখানে কাজ করছেন। অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. সানাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে পাহাড় কাটার কোনো ঘটনা ঘটেনি। যে রাস্তা কাটার কথা বলা হচ্ছে, তা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৈরি করা পুরোনো রাস্তা। একটি চুক্তির মাধ্যমে তা আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে সিডিএ। রাস্তার পাশে আমাদের ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেখান থেকে যে মাটি উঠেছে তা রাস্তার ওপরে ফেলেছি। অনেক আগেই পাহাড় কেটেছিল সিডিএ। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বায়জিদ লিঙ্ক রোডের প্রকল্প পরিচালক আসাদ বিন আনোয়ার বলেন, রাস্তাটা হচ্ছে পাহাড়ের মাঝখানে। আমরা পরিবেশের অনুমতি নিয়ে কাজ করেছিলাম। আর অনুমতি ছাড়া পাহাড় না কাটার জন্য এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি ফর উইমেনকেও বলা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডেমরার ডিএনডি খালে পড়ে থাকে কুকুর-বিড়ালের মৃতদেহ

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় আপত্তি নেই যুক্তরাজ্যের

সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে পারে ইন্টারনেটের ধীরগতি

আলভারেজের দাম বেঁধে দিল ম্যানসিটি

জোট বেঁধে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় রাশিয়া-চীনের যুদ্ধবিমানের হানা

প্রাথমিক বিদ্যালয় কবে খুলবে, সিদ্ধান্ত রোববার

পাঁচ পদে ২০ জনকে নিয়োগ দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়

মোবাইল ইন্টারনেট কবে চালু হবে, জানা যাবে কাল

শিশু আহাদের দাফন দিয়ে বাড়িতে শুরু পারিবারিক কবরস্থানের

প্যারিসে বেরসিক বৃষ্টিতে ভিজল বিশ্ব নেতারা

১০

শেখ হাসিনার অর্জন ধ্বংস করতে চায় হামলাকারীরা : ওবায়দুল কাদের

১১

ইরানের সঙ্গে সমঝোতা করতে চেয়েছিলেন বাইডেন

১২

ইহুদিদের পছন্দ করেন না কমলা, বললেন ট্রাম্প

১৩

ন্যাটোর আদলে সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব ইসরায়েলের

১৪

যানজট সরিয়ে ভোগান্তি দূর করেন নবরু

১৫

বর্ষায় জমে উঠেছে চাক জালের হাট

১৬

ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

১৭

সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

১৮

ঝালকাঠিতে গভীর নলকূপে পানির সংকট

১৯

ব্যাট-বলে সাকিবকে শরীফুলের টেক্কা

২০
X