ঋতু পরিবর্তনের সময়েবিভিন্ন ধরনের ঠান্ডাজনিত ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রতিকারের জন্য জিঙ্ক জাতীয় খাবার বিশেষত ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদি দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘এ’ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার, যেমন—লেবু, কমলা, বাঁধাকপি, ব্রকলি, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, পালংশাক ইত্যাদি রাখা ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন অন্তত এক হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণ করলে সর্দি, জ্বর ও ঠান্ডার প্রভাব অনেকটাই কমে যায়। সর্দি বা জ্বরের স্থিতিকাল কমে প্রায় এক থেকে অর্ধদিন হয়ে যায়। মৌসুমি ফল পেয়ারা, আমল ও লেবুর শরবত পান করুন। কুসুম গরম দুধে কাঁচা হলুদ ও মধু মিশিয়ে পান করলে সর্দির প্রভাব থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।
শীতে সতেজ থাকার জন্য শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সীর গরম গরম সবজি স্যুপ, গ্রিন টি, আদা, তুলসী বা পুদিনা চা পান করতে পারেন। ঘন লিকারের দুধ চা বা কফি এড়িয়ে চলা ভালো। ঠান্ডা আবহাওয়ায় তেষ্টা কম পায় বলে অনেকেই পানি পান কমিয়ে দেন। অথচ এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় বলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। পানির পাশাপাশি কুসুম গরম পানিতে কমলা, মালটা, পেঁপে বা যে কোনো ফ্রেশ ফলের জুস খেতে পারেন। ওজন কমাতে চাইলে জুসে বাড়তি চিনি বাদ দিন। শরীর গরম রাখতে সহায়তা করে মধু, ম্যাপেল সিরাপ, অ্যাপেল সিডর ভিনেগার, আদা, রসুন, কালিজিরা, লং, দারুচিনি, গোলমরিচ ইত্যাদি। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এ খাবারগুলো রাখলে শীতে উপকার পাবেন।
শীতে হাঁপানি ও অ্যালার্জি সমস্যা থাকলে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ওমেগা-৩, ভিটামিন-বি৬ জাতীয় খাদ্য যেমন—পেঁয়াজ, কলা, মাছ, পুদিনা, তুলসী, রোজমেরি ইত্যাদি রাখুন দৈনিক খাদ্য তালিকায়। অতিরিক্ত লবণ ও ওমেগা-৬ ফ্যাট গ্রহণে অনেক সময় হাঁপানি ও অ্যালার্জির প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই এসব যতটা সম্ভব পরিহার করুন। শীতে সুস্থ থাকতে বাসি বা ঠান্ডা খাবার না খেয়ে যথাসম্ভব গরম ও টাটকা খাবার খেতে চেষ্টা করুন। বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও শুকনো ফল শীতকালে বেশ উপকারী। কারণ এসব খাবার বিপাক
প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে শরীরে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একইভাবে মাটির নিচের সবজি অর্থাৎ মূল আছে যেসব সবজিতে, সেগুলো হজম হতে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। এতেও শরীর গরম থাকে এবং ঠান্ডা লাগার প্রবণতা কমে যায়।
আসফি মোহাম্মদ
পুষ্টিবিদ, এভারকেয়ার হাসপাতালের