গাউসুল আজম শাহ সুফি মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি ওরফে হজরত কেবলার ১১৭তম ওরস উপলক্ষে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি মাইজভান্ডারি দরবারে মানুষের ঢল নেমেছে। তিন দিনব্যাপী ওরসের দ্বিতীয় দিন আজ সোমবারও দরবারে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। সবাই মাজার জিয়ারত, মোনাজাত, জিকির আজকার, ছেমাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সময় কাটাচ্ছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় শুরু হয় কাওয়ালি গানের আসর। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে এ আসর চলে গভীর রাত অবধি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর এ ওরসে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া ও ওমানসহ নানা দেশ থেকে অসংখ্য ভক্ত এতে অংশ নেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মুসলমান ছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা মাইজভান্ডারির ওরশে যোগ দেন। ওরস ঘিরে সব ধর্মের মানুষের মিলনমেলা বসে। গতকাল রোববার বিকেলে মাইজভান্ডারির দরবার জিয়ারত করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ড. মোস্তফা ওসমান তুরান।
আজ সোমবার মাজার শরিফে গিলাফ চড়ানো, মিলাদ, তাওয়াল্লোদে গাউছিয়া, জিকির ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার ওরসের শেষ দিনে মিলাদ, জিকির ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারি।
ওরশ শরিফের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন মাইজভান্ডারি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ম্যানেজিং ট্রাস্টি সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারি। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘ওরস সুপারভিশন কমিটির উদ্যোগে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা এবং ভিডিওচিত্র ধারণের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে গাড়ি পার্কিংসহ অতিথিদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে থাকা, সময়মতো জামাতসহকারে নামাজ আদায়, বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন, আলোকসজ্জা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা রয়েছে।’
এদিকে ওরস উপলক্ষে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-নাজিরহাট বিশেষ রেলের ব্যবস্থা করেছে। চালু রয়েছে বিশেষ বাস সার্ভিস। আগত ভক্তদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন ব্যাপক ব্যবস্থা নিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা রওজা এবং এর আশপাশে অবস্থান নিয়েছেন। সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, আনসার এবং মাইজভান্ডারি ওরশ শরিফ সুপারভিশন কমিটির বিপুলসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও মাইজভান্ডারি স্পেশাল ফোর্স (এমএসএফ) দায়িত্ব পালন করছে।