স্বপন চন্দ্র দাস, সিরাজগঞ্জ
২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যমুনার চরে পণ্য পরিবহনে সম্বল ঘোড়ার গাড়ি

প্রমত্তা যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলে বসবাস করা মানুষকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয় প্রকৃতির নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে। রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্ঝা আর প্রচণ্ড শীতের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় চরবাসীকে। বিশেষ করে যাতায়াত ব্যবস্থায় আর পণ্য পরিবহনে যেন যুদ্ধে নামতে হয় তাদের। জমির উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে কিংবা ঘর থেকে হাটে-বাজারে নিতে বিড়ম্বনার শেষ নেই। যাতায়াত আর পণ্য পরিবহন দীর্ঘদিন ধরে চরাঞ্চলবাসীর সম্বল হিসেবে রয়েছে নৌকা আর ঘোড়ার গাড়ি। বর্ষাকালে নৌকাযোগে আর শুষ্ক মৌসুমে ঘোড়ার গাড়ি করেই মালামাল পরিবহন করেন তারা।

প্রকৃতিকন্যা যমুনার অভ্যন্তরে চরাঞ্চলের রাস্তাগুলো সব সময়ই উঁচু-নিচু, বালুকাময় দুর্গম। নির্দিষ্ট কোনো রাস্তা নেই এসব চরে। বিভিন্ন সময়ে সুবিধাজনক রাস্তা বেছে নেন চরের মানুষ। এসব রাস্তায় মাইলের পর মাইল হেঁটে যাতায়াত করেন তারা। দুর্গম এসব রাস্তায় মোটরসাইকেলেও যাত্রী পরিবহন করা হয়। তবে ভাড়া অনেক বেশি হওয়ায় মোটরসাইকেলে চলাচলকারীর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। আর পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন একেবারেই অসম্ভব।

সিরাজগঞ্জ জেলার অধিকাংশ চরাঞ্চলের অবস্থা এখনো এমনটাই রয়েছে। তবে জেলার বেশ কয়েকটি চরে পাকা রাস্তা নির্মাণ হওয়ার ফলে কিছু আধুনিক যানবাহন (থ্রি হুইলার) চলাচল করতে দেখা যায়। কিন্তু যমুনার পাড় থেকে নৌকাযোগে আসা মালামাল কিংবা বিস্তৃর্ণ ফসলি জমির মাঝখান থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনে একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি।

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের মহেশকাংলা, সয়াশেখা ও বড় কয়ড়া চরাঞ্চলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যমুনায় নৌকাযোগে শহর থেকে আনা মালপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে ঘোড়ার গাড়িতে। নদীর তীর থেকে খাড়া ঢাল বেয়ে ঘোড়ার গাড়ি ওপরে উঠছে। এরপর ছুটে চলছে মাইলের পর মাইল।

সত্তর বছর বয়সী ঘোড়ার গাড়ির চালক আবদুল কুদ্দুস বলেন, আমরা চরের কৃষক। অনেক আগে থেকেই ঘোড়ার গাড়ি চালাই। আবাদের কাজের ফাঁকে ঘোড়ার গাড়ি চালাই। বড় কয়ড়া গ্রামের আবদুল গনি বলেন, আমার জমির ফসল ঘরে তোলা ও আর হাটবাজারে নেওয়ার জন্যই ঘোড়ার গাড়ি চালাই। যমুনাপাড়ের মুদি দোকানদার বেলাল হোসেন বলেন, দোকানের মালামাল পরিবহন ছাড়াও আমার ঘোড়ার গাড়িতে ভাড়াও বহন করি।

সয়াশেখা চরের কৃষক আব্দুল কাদের, সাইদুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, লালচাঁন মিয়াসহ অনেকেই জানান, বাড়ি থেকে কয়েক মাইল দূরে তাদের কৃষিজমি। এসব জমির ফসল ঘরে তুলতে ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ঘোড়ার গাড়ি না পেলে মাথায় বা কাঁধে বোঝা নিয়ে আসতে হয়। এ ছাড়া শহর থেকে মালপত্র আনতেও ঘোড়ার গাড়িই ভরসা।

কাওকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জিয়া মুন্সী বলেন, যমুনার মধ্যবর্তী একটি ইউনিয়ন কাওয়াকোলা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, গ্রাম হবে শহর। সেটা বাস্তবায়নে এখন চরের অনেক রাস্তাই পাকা হয়েছে। তবে নদী তীরবর্তী বালুময় রাস্তাগুলোতে চলাচল বা পণ্য পরিবহনের জন্য একমাত্র যানবাহন ঘোড়ার গাড়ি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অবরোধ সফলে রাজধানীর আসাদগেটে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

গাজায় ৩.৪ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য পাঠাল তুরস্কের রেড ক্রিসেন্ট

বগুড়া-৩ আসনে ৭ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

অভিজ্ঞতা ছাড়াই পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি

১২ দিন স্মৃতিসৌধে যেতে মানা

ফেলিক্সের গোলে অ্যাথলেটিকোকে হারাল বার্সেলোনা

শেখ মনির ৮৫তম জন্মদিন আজ

৪ ডিসেম্বর : নামাজের সময়সূচি

৪ ডিসেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে

সোমবার ঢাকার যেসব এলাকায় যাবেন না

১০

রাশিফল অনুযায়ী কেমন যাবে আজকের দিনটি

১১

নাশকতা ঠেকাতে কুলাউড়া রেলস্টেশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সতর্কতা

১২

ময়মনসিংহে ২৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

১৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল

১৪

শোকজ করায় আনন্দিত শামীম ওসমান

১৫

ট্রেনে কাটা পড়ে দুই বৃদ্ধ নিহত

১৬

শরিকদের সঙ্গে আজ বসবেন শেখ হাসিনা

১৭

হাঁসে ধান খাওয়ায় পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

১৮

মানিকগঞ্জ-২ আসনে ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

১৯

এমপি হতে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, বাছাইয়ে বাতিল হলো মনোনয়ন

২০
X