শিশুর মাঝে শিক্ষার ভিত গড়ে তোলার প্রধানতম দায়িত্ব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। সে কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের বিষয়ে জোর দিয়ে আসছেন শিক্ষাবিদরা। কিন্তু শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি নিয়ে নয়ছয় চলছে। প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-পিটিআইগুলোতে চালু থাকা ১৮ মাসের প্রশিক্ষণ কোর্সের সময় সংকুচিত করে ১০ মাস করতে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন। জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে প্রশিক্ষণ শুরুর কথা থাকলেও এখনো কোর্স ডিজাইন করা সম্ভব হয়নি। নতুন প্রশিক্ষণার্থী না আসায় কার্যত বন্ধ পিটিআইগুলো। ইন্সট্রাক্টররা বসে বসে সরকারি বেতন নিচ্ছেন। আবার কোর্স ডিজাইন করা হয়েছে এমনভাবে, যেখানে প্রশিক্ষণের মেয়াদ হতে যাচ্ছে মাত্র ছয় মাস। এর ফলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে ঘাটতি থাকবে বলে মত শিক্ষাবিদদের।
ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) নীতিমালা-২০১৯ থেকে জানা গেছে, এক সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ছিল এক বছর মেয়াদি। তখন এর নাম ছিল সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন (সিইনএড)। এজন্য ১৯৮২ সালে ‘বাংলাদেশ সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন বোর্ড’ প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ এই
কোর্সের মেয়াদ এক বছর থেকে বাড়িয়ে ১৮ মাস (দেড় বছর) করার কথা বলা হয়। কোর্সের নাম দেওয়া হয় ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন’। এরপর শিক্ষানীতির সুপারিশ ও শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ২০১২ সালের ১ জুলাই সাতটি বিভাগীয় শহরে অবস্থিত পিটিআইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে দেড় বছর মেয়াদি কোর্স চালু করা হয়। ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) ৩৭তম সভায় প্রস্তাবিত ডিপিএড পরিচালনা নীতিমালা অনুমোদন হয়। ২০১৯ সালের পর থেকে দেশের সবকটি পিটিআইয়ে এই কোর্স শুরু করা হয়। পিটিআইগুলোর এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটির কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করছে ময়মনসিংহে অবস্থিত নেপ।
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোয় মোট শিক্ষক আছেন ৪ লাখের মতো। দেশের ৬৭টি পিটিআইয়ের অধীনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এটি সব শিক্ষকের জন্যই বাধ্যতামূলক। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেড় বছরের প্রশিক্ষণ কোর্স চলাকালীন বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট ও সময়সাপেক্ষ প্রশিক্ষণের কথা বলে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন গত বছরের মাঝামাঝি থেকে পিটিআইর মাধ্যমে চলমান শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সকে সংকুচিত করার তৎপরতা শুরু হয়। এই কর্মযজ্ঞের পেছনে রয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা। গত ২২ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ‘পরিমার্জিত প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রম স্টিয়ারিং কমিটির’ দ্বিতীয় সভায় প্রশিক্ষণের মেয়াদ ১৮ থেকে কমিয়ে ১০ মাস করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ছয় মাস প্রশিক্ষণ হবে পিটিআইয়ে এবং বাকি চার মাস প্র্যাকটিস টিচিং। এর মানে হলো—চার মাসের প্রশিক্ষণ কাজটি হবে মূলত বিদ্যালয়ে। ‘ডিপিএড কোর্স’ বদলে এর নাম দেওয়া হয় ‘বেসিক প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং (বিপিটিটি)।
ওই সভায় উপস্থিত নেপের মহাপরিচালক মো. শাহ আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হ্যাপি কুমার দাস এবং ঢাকা পিটিআইর সুপারিনটেনডেন্ট মো. কামরুজ্জামান কোর্সটিকে এক বছর করার সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু সেটি না করে উল্টো কোর্সের মেয়াদ আরও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হ্যাপি কুমার দাস কালবেলাকে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই প্রশিক্ষণ করা হয় প্রি-সার্ভিস হিসেবে; অর্থ্যাৎ চাকরিতে যোগদানের আগে। আমাদের দেশে যেহেতু এটি নেই, তাই একজন গ্র্যাজুয়েটকে শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা শেখানো প্রয়োজন, তা-ই ডিপিএড কোর্সে শেখানো হয়। এটির জন্য একটা বড় সময়ের দরকার। কিন্তু এখন সময় কমিয়ে ১০ মাস করা হয়েছে, এটি হাস্যকর ব্যাপার। যে উদ্দেশ্যে এই কোর্স, সেই উদ্দেশ্য সফল হবে না।
তিনি বলেন, ছয় মাসের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষককে শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলা খুবই কঠিন হবে। প্রশিক্ষণে ঘাটতি নিয়েই বিদ্যালয়ে ঢুকবে শিক্ষকরা। এর প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের ওপরও। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষক প্রশিক্ষণে বারোটা বাজানো শুরু হয়েছে মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব হাসিবুল আলমের (গোলাম মো. হাসিবুল আলম) সময়। বাকি সবাই মিলে এখন ষোলোকলা পূর্ণ করছে। আসলেই তারা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ভালোবাসেন কিনা, সেটাই আমার প্রশ্ন।
এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের কোর্সের সময় সংকুচিত করার সিদ্ধান্তে পিটিআইগুলোতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে তাদের পক্ষ থেকে আইনি নোটিশও দেওয়া হয়েছে।
পিটিআই ইন্সট্রাক্টরদের মতে, শিশুদের পাঠদানের জন্য সক্ষম শিক্ষক তৈরি করতে হলে পেডাগোজির ওপর ব্যাপক অনুশীলন প্রয়োজন, যা স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণে সম্ভব নয়। তা ছাড়া প্রস্তাবিত মৌলিক প্রশিক্ষণের একটা অংশ পিটিআইর বাইরে শিক্ষকদের নিজ উপজেলায় সম্পাদিত হবে, যার মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের, যাদের নিজেদেরই শিক্ষাবিষয়ক ডিগ্রি নেই। ১৮ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণের চতুর্থ টার্ম (শেষের ছয় মাস) পিটিআইর বাইরে শিক্ষকদের নিজ বিদ্যালয়ে সম্পাদিত হওয়ায় উপযুক্ত মনিটরিংয়ের অভাবে তা সফল হয়নি বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। সেখানে মৌলিক প্রশিক্ষণে পিটিআইর তত্ত্বাবধানের বাইরের অংশ কীভাবে সফল হবে, তা বোধগম্য নয়।
অন্যদিকে, ডিপিএড কার্যক্রমের কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করা নেপকেও বিপিটিটি কার্যক্রমে রাখা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেপের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, কর্তার ইচ্ছাতেই কর্ম। টাকা-পয়সার বিষয়টি অধিদপ্তর দেখে, আমাদের দায়িত্ব শুধু মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা বাস্তবায়ন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহম্মদ কালবেলাকে বলেন, যুগের চাহিদা অনুযায়ী মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্স করা হয়েছে। শিক্ষকদের দক্ষতা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে এই কোর্স সাজানো হয়েছে। এক বছর ধরে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা কোর্স সাজিয়েছি।
প্রশিক্ষণার্থী নেই, পিটিআই ভবনগুলোতে ঝুলছে তালা
প্রতিবছরের জানুয়ারিতে পিটিআইগুলোতে শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। কিন্তু এবার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেটি শুরু হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখনো কোর্স ডিজাইন করা হয়নি। তাই নতুন করে কোনো প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক পিটিআইতে পাঠানো হয়নি। এ কারণে অলস সময় কাটাচ্ছেন ইন্সট্রাক্টররা। পিটিআই ভবনগুলোতে ঝুলছে তালা। ইন্সট্রাক্টররা সকালে এসে তাদের কক্ষে বসছেন। পত্রিকা পড়ে আর চা পান করে তাদের দিন পার হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তারা বাসায় ফিরছেন।
এ বিষয়ে সিলেট পিটিআইর একজন ইন্সট্রাক্টর কালবেলাকে বলেন, প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হলেও এ বছর জানুয়ারি শেষ হতে চললেও এখনো শিক্ষক প্রশিক্ষণার্থী পাঠানো হয়নি। পিটিআইয়ে কর্মরত জনবল কর্মহীন অলস সময় কাটাচ্ছেন। এতে সরকারের রাজস্ব ব্যয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ৬৭টি পিটিআইতে একসঙ্গে নতুন প্রশিক্ষণ চালু না করে যেসব জেলায় পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন, সেসব জেলার পিটিআইতে চলমান ডিপিএড প্রশিক্ষণ চালু রাখা যেত।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহম্মদ বলেন, পিটিআইগুলোতে প্রশিক্ষণার্থী পাঠানোর জন্য আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি ৩৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারব। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি।
তবে নেপের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে নতুন কোর্সের প্রশিক্ষণ শুরু করা সম্ভব নয়। মার্চে শুরু হতে পারে।
পিটিআইগুলোতে ইন্সট্রাক্টর বাড়ানোর দাবি
দেশে পিটিআই আছে ৬৭টি। নিয়মানুযায়ী, প্রতিটি পিটিআইতে ১৭ জন করে ইন্সট্রাক্টর থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বেশিরভাগ পিটিআইতে পর্যাপ্ত ইন্সট্রাক্টর নেই। যেমন সিলেটে আছেন ১০ জন, সুনামগঞ্জে ৬, হবিগঞ্জে ৪, ফেনীতে ৭, কুমিলায় ১০, মৌলভীবাজারে ৭, চট্টগ্রামের পটিয়ায় আছেন ৬ জন ইন্সট্রাক্টর। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে পর্যাপ্ত ইন্সট্রাক্টর নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন পিটিআই সংশ্লিষ্টরা।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
১৮ মাসের কোর্সের সময় কমিয়ে ১০ মাসব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। এর কারিকুলাম প্রণয়নে নেওয়া হয়নি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। এমনকি কোর্সের জন্য ম্যাটেরিয়াল প্রণয়নেও পরামর্শ নেওয়া হয়নি বিশেষজ্ঞদের। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশিক্ষণের গুণমান ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিএড প্রোগ্রামের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ ও ফোকাল পয়েন্ট রঙ্গলাল রায় বলেন, এটা সরকারের বিষয়, আমার কোনো মতামত নেই।
২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা
ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকার চাইলে কিছু পরিমার্জন করে ১৮ মাসের কোর্স রাখতে পারে। আর কমাতে চাইলে সর্বনিম্ন এক বছর করতে পারে। এর চেয়ে কমালে সেটা শিক্ষক প্রশিক্ষণ হবে না।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষকরা একেবারেই প্রশিক্ষণ ছাড়া বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। পেডাগোজিক্যাল ধারণা থাকে না। আবার প্রাথমিকে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নেই। এজন্য ডিপিএডে পেডাগোজিক্যাল ধারণার পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক ধারণাও দেওয়া হয়। আমরা বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলে আসছি; কারণ নতুন কারিকুলামে যে পেডাগোজি, যে কেউ যে কোনো বিষয় পড়াতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। এ অবস্থায় ভালো প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকরা পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিয়েও প্রয়োগ করছে না। প্রশিক্ষণ কীভাবে কার্যকর করা যায়, সেটা না ভেবে উল্টো সময়সীমা কমানো হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা আরও দুর্বল হয়ে যাবে। এই প্রশিক্ষণে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে, সেটা আমার মনে হয় না।
তিনি বলেন, এটা সত্য যে এখন অনেক নিয়োগ হচ্ছে। সরকারের ভাষ্যে—অনেক শিক্ষক প্রশিক্ষণের বাইরে থেকে নিয়োগ পাচ্ছে। আবার লম্বা সময় তাদের স্কুলের বাইরে রাখলে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এজন্য বিকল্প ভাবতে হবে। এর মানে এই নয় যে, যাচ্ছেতাইভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের বিদ্যালয়ে পাঠানো হবে।