একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চেয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গতকাল বুধবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের আয়োজিত ‘৭১-এ গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চাই’ বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের কাছে দাবি করেছি, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যারা আটকে পড়া পাকিস্তানি আছে, তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। পৃথিবীর বহু দেশ গণহত্যার জন্য ক্ষমা চেয়েছে। পাকিস্তানেরও সত্য মেনে নিয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের সময় যে গণহত্যা, গণহত্যা নিয়ে যত জায়গা যত সংজ্ঞা আছে, তার সবটার সঙ্গেই মিলে যায়। কাজেই এটি যে গণহত্যা এটির সঙ্গে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই। পৃথিবীর যত জায়গায় গণহত্যা নিয়ে কথা হয়, জাদুঘর আছে, সবখানেই বাংলাদেশের কথা আছে।
দীপু মনি বলেন, পৃথিবীতে এত দাম দিয়ে আর কোনো দেশ স্বাধীন হয়নি। রুয়ান্ডাতে তিন মাসে ১০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আর বাংলাদেশে ৯ মাসে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা যত বেশি বিশ্বকে জানাতে পারব, তত দ্রুত আমাদের এটি যে গণহত্যা, তা স্বীকৃতি পাবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাকিস্তানিরা ’৫২-তে মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, বিহারিরা বাঙালিদের ’৫৪ সালে হত্যাযজ্ঞ চালায়, ’৬৯ সালে সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করা হয়েছে। একাত্তরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
আলোচনা সভায় ‘১৯৭১ এ গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চাই’-এর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সিকদার। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব নারায়ণ সাহা মণি। এ সময় কলকাতার ইংরেজি পত্রিকা দ্য ওয়ালের নির্বাহী সম্পাদক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক অমল সরকার বলেন, স্বাধীনতার বিরোধীশক্তি, সে যত দুর্বল হোক না কেন, তাকে আগে নির্মূল করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত থাকলে তবেই তা সম্ভব। এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ভারতের স্বাধীনতা, পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও দেশ ভাগের বিস্তারিত নিয়ে অমল সরকারের ‘আমার দেশ আমার দ্যাশ’ বইয়ের মোড় উন্মোচন করা হয়।