জাকির হোসেন লিটন
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৫:৩৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

সংঘাতময় রাজনীতিতে উদ্বিগ্ন বিশিষ্টজন

সংঘাতময় রাজনীতিতে উদ্বিগ্ন বিশিষ্টজন
২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অুনষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি চলছে ক্ষমতাসীন দলে। নিয়মিত সভা-সমাবেশও করছেন তারা। দলটির নেতারা বলছেন, গতবারের মতো সংবিধান মেনে বর্তমান সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে এবারের জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ইভিএমের পক্ষে তারা। অন্যদিকে, বিএনপিসহ সরকারবিরোধীরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা। বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠেও রয়েছেন। বিরোধীদের এসব কর্মসূচি ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতাও শুরু হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। নানা বাধাবিপত্তির মধ্যেও ৯টি বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করেছে বিএনপি। সর্বশেষ আগামীকাল শনিবারের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ কেন্দ্র করে রাজধানীতে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিএনপিকে কোনোভাবেই নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেবে না প্রশাসন। অন্যদিকে, সেখানেই সমাবেশ করার পক্ষে অনড় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে বুধবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ চলে। এতে একজন নিহত ও বহু নেতাকর্মী আহত হন। দলীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাসহ কয়েকশ কর্মী-সমর্থককে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবরুদ্ধ বিএনপি কার্যালয় গতকালও ছিল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। শুধু দলীয় কার্যালয় নয়, পুরো নয়াপল্টনের প্রধান সড়ক এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। সরকার এবং রাজপথের প্রধান বিরোধীদের বিপরীতমুখী এমন অবস্থানে দেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক আরও অস্থিরতার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার প্রতি জোর দিচ্ছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। না হলে নির্বাচনকেন্দ্রিক উত্তাপ ও সহিংসতার মধ্যে উগ্রবাদের উত্থানের আশঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করছেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কালবেলাকে বলেন, ‘নির্বাচন এগিয়ে এলে সংকটও ঘনীভূত হয়। রাজনীতিবিদদের মধ্যে ধৈর্য ও সহনশীলতা থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সবারই লক্ষ্য হওয়া উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ। রাজনীতিবিদদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশ ও জনকল্যাণ। সেখানে সংঘাত-সহিংসতার স্থান নেই। রাজনীতির নামে যা হচ্ছে এটি সাধারণ মানুষের কাছে কাম্য নয়। সংকট নিরসনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার কেন এত ভয় পাচ্ছে, জানি না। নয়াপল্টনে একটা বড় সভা-সমাবেশ করলে কী আসে যায়, কীই বা ক্ষতি হয়। পুলিশকে দিয়ে এভাবে দমনপীড়ন করে সরকার ভুল করেছে। এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এসব না করে তাদের সমাবেশ করতে দেওয়া উচিত ছিল।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সভা-সমাবেশ করতে পারবে। প্রয়োজনে চায়ের নিমন্ত্রণও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে ভিন্ন। সমাবেশে বাধা দিয়ে হামলা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বিরোধীদের। এতে দেশ-বিদেশে সবাই অসন্তুষ্ট। বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ জানাচ্ছে। তাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এটি সরকারকেই সমাধান করতে হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়।’ সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা যে পথে চলছি, সেটি এক কথায় ভয়ানক। আমরা যেন বারুদের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। স্বাধীনতার এত বছর পরও দেশে এখনো বিরোধ ও বিচ্ছিন্ন করার রাজনীতি চলছে। হানাহানি-সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। ধর্মীয় এবং জাতিগত বিরোধও রয়েছে। এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিরোধীদের দমনে যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়, তা মেনে নেওয়া যায় না। এটি বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এখনই রাজনৈতিক সমঝোতা দরকার। আগামীতে কী ধরনের নির্বাচন হবে, নির্বাচনকালীন সরকার কী ধরনের হবে, সেটা আলোচনার মাধ্যমে রাজনীতিকদেরই ঠিক করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। না হলে সব অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দায় রাজনীতিকদেরই নিতে হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হামলা মামলা ও লাঞ্ছনার শিকার লালমনিরহাটের ৬ সাংবাদিক

কলেজছাত্রীকে বিবস্ত্র, লজ্জায় আত্মহত্যা

প্যারিসের আলোয় উদ্ভাসিত অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

ট্রলার উদ্ধারে গিয়ে ডুবল স্পিডবোট, সৈকতে ভেসে এল ২ মরদেহ

সিলেটে ‘অবৈধ’ নিয়োগে প্রভাষক জালিয়াতিতে অধ্যক্ষ!

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী শনিবার

ইতিহাসে এই দিনে কী ঘটেছিল?

অস্ট্রেলিয়ায় উদ্ভাবিত বিশ্বের প্রথম টাইটানিয়াম হার্ট মানবদেহে প্রতিস্থাপন

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

শক্তিশালী পাসপোর্টে শীর্ষে সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশের অবস্থান কত?

১০

২৭ জুলাই : নামাজের সময়সূচি

১১

যে ভুলে মরতে পারে টবের গাছ

১২

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে ২৪ বছর ধরে চাকরি, অতঃপর..

১৩

ঝিনাইদহে ২৪ বছর ধরে ক্রিকেট ব্যাট বানাচ্ছেন ৩ ভাই

১৪

জামালপুরে ১০ মামলায় আসামি ২৩০৫, গ্রেপ্তার ৩২

১৫

আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

১৬

যাত্রী পারাপার কমেছে আখাউড়া স্থলবন্দরে

১৭

সিলেটে ৭ চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭

১৮

‘সাংবা‌দি‌কের ওপর হামলা নিঃস‌ন্দে‌হে ছাত্র‌দের কাজ নয়’

১৯

রাজশাহীতে সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার ১১৬৩

২০
X